এই ৫ খাবারই নীরবে বাড়িয়ে দিচ্ছে রক্তচাপ!

উচ্চ রক্তচাপ আজকাল নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত। এটি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান ঝুঁকির কারণ। জেনেটিক্স ও মানসিক চাপের পাশাপাশি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসও রক্তচাপ বৃদ্ধিতে বিশাল ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুস্থ হৃদযন্ত্র ও ওজন নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস প্রায় ৭০% পর্যন্ত দায়ী।
অবাক করার বিষয় হলো—আমাদের প্রতিদিনের অনেক খাবারই ধীরে ধীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, অথচ আমরা তা টেরও পাই না! তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই—এই খাবারগুলো পুরোপুরি বাদ না দিয়েও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, যদি জানা থাকে পরিমিতির ভারসাম্য।
চলুন দেখে নিই, কোন পাঁচটি খাবার নীরবে আপনার রক্তচাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে—
১. চিনিযুক্ত পানীয়
কোল্ড ড্রিংক, কোমল পানীয় কিংবা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত জুস—সবই উচ্চ রক্তচাপের গোপন শত্রু। এসব পানীয়তে থাকা উচ্চ ফ্রুক্টোজ কেবল ওজন বাড়ায় না, রক্তনালীর কার্যকারিতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের পাশাপাশি এটি সরাসরি রক্তচাপ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
২. ইনস্ট্যান্ট নুডলস
সহজলভ্য ও বাজেট-বান্ধব এই খাবারে থাকে বিপুল পরিমাণ সোডিয়াম। এক প্যাকেট ইনস্ট্যান্ট নুডলসেই দিনের প্রস্তাবিত লবণ গ্রহণের অর্ধেকেরও বেশি সোডিয়াম থাকতে পারে!
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ মিলিগ্রামে (mg) উল্লেখ থাকা উচিত—তাই কেনার সময় একবার চোখ বুলিয়ে নিন।
৩. প্রক্রিয়াজাত মাংস
হটডগ, সসেজ বা টিনজাত মাংস—এসব প্রক্রিয়াজাত মাংস সাধারণত সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত লবণ, নাইট্রেট ও প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। এগুলো শুধু রক্তচাপ বাড়ায় না, বরং রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতাও কমিয়ে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
৪. পনির
পনির যেমন প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস, তেমনি এতে লুকানো থাকে উচ্চমাত্রার সোডিয়াম। নিয়মিত বা বেশি পরিমাণে পনির খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। মাঝে মাঝে অল্প পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ, তবে দৈনন্দিন খাবারে এটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
৫. পাউরুটি ও বেকারি পণ্য
শোনার মতো অবাক লাগলেও, পাউরুটি ও নানা ধরনের বেকারি আইটেম সোডিয়ামের অন্যতম গোপন উৎস। নিয়মিত খেলে এটি নীরবে রক্তচাপ বাড়াতে পারে। তাই সম্ভব হলে হোল গ্রেইন ব্রেড বেছে নিন, কিংবা বাড়িতেই তৈরি করুন পাউরুটি—তাতে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
শেষ কথা
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে খাদ্যাভ্যাসে পরিমিতি ও সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। নিয়মিত পরিমাণমতো পানি পান, ফলমূল, শাকসবজি, এবং পর্যাপ্ত ঘুম রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। মনে রাখবেন, সচেতন খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে আপনার হৃদয়ের সবচেয়ে বড় বন্ধু।